মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই GBP/USD কারেন্সি পেয়ারেরও তীব্র দরপতন ঘটেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতনের মাত্রা ইউরোর তুলনায় বেশি ছিল; তবে, দুটি কারেন্সি পেয়ারের ক্ষেত্রেই মূল্যের মুভমেন্ট এখনো একটি বিস্তৃত টেকনিক্যাল কারেকশনের মধ্যেই রয়েছে, যা হায়ার টাইমফ্রেমগুলোতে বিশেষভাবে দৃশ্যমান। ফলে, আমরা মনে করি না যে ট্রেডারদের মনোভাবের পরিবর্তন হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না, যার ফলে গত পাঁচ মাস ধরে ডলার দুর্বল হয়েছে। যদি এখন কোনো অলৌকিক উপায়ে মার্কিন কারেন্সির দর বৃদ্ধি পায়, তবে সেটি কেবল একটি বিষয়ই নির্দেশ করে—ট্রেডাররা ডলার বিক্রি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে এবং এখন কেবল মুনাফা গ্রহণ করা হচ্ছে। অর্থাৎ, ট্রেডাররা EUR/USD এবং GBP/USD পেয়ারের লং পজিশন ক্লোজ করছে, যার ফলে ইউরো ও পাউন্ডের চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে এবং এর ফলস্বরূপ ডলারের দর পুনরায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে মঙ্গলবার মাত্র একটি সেল সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। 1.3458 একটি নতুন লেভেল, যা পূর্ববর্তী বিশ্লেষণের অংশ ছিল না। মার্কিন সেশনে, এই পেয়ারের মূল্য 1.3413–1.3421 এরিয়ার নিচে কনসোলিডেট করে, যার ফলে নতুন ট্রেডাররা শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ পায়। তবে, এই দরপতন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক চার্টে এখনও GBP/USD পেয়ারের মূল্যের শক্তিশালী নিম্নমুখী মুভমেন্ট দেখা যাচ্ছে। আমাদের বিশ্বাস, এই পেয়ারের এই দরপতন নিছক একটি টেকনিক্যাল কারেকশন, কারণ মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধির পক্ষে কোনো মৌলিক কারণ বিদ্যমান নেই। তবুও, ট্রেডাররা শুধুমাত্র টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতেও ট্রেড করতে পারে, এবং এখন আমরা সেটাই দেখছি। যতক্ষণ না মূল্য ট্রেন্ডলাইনের উপরে কনসোলিডেট করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত গত ছয় মাসব্যাপী চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার জন্য কোনো টেকনিক্যাল ভিত্তি নেই।
বুধবার GBP/USD পেয়ারের আরও দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে, তবে ট্রেডারদের উচিত মার্কেটের সামগ্রিক পরিস্থিতি ও বৈশ্বিক মৌলিক উপাদানগুলো বিবেচনায় নেওয়া, কারণ সেগুলো এখনো স্পষ্টভাবে মার্কিন ডলারকে কোনো সমর্থন প্রদান করছে না।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেলগুলো হলো: 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3458, 1.3518–1.3532, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763, 1.3814–1.3832।
বুধবার যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। যদিও মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের তুলনায় এটি ট্রেডারদের জন্য কম গুরুত্বপূর্ণ, তথাপি সকালের দিকেই এই প্রতিবেদনের প্রভাবে একটি অস্থির মুভমেন্ট দেখা দিতে পারে। গতকাল যেমনটা দেখা গেছে, অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রতি ট্রেডারদের প্রতিক্রিয়া সবসময় একরকম হয় না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।