সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট

সোমবার GBP/USD পেয়ারের দরপতন অব্যাহত ছিল। সম্প্রতি ইউরো ও পাউন্ডের মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক কম দেখা যাচ্ছে, কারণ ইউরোর মূল্য কয়েকদিন ধরে ফ্ল্যাট রেঞ্জে রয়েছে, অথচ এই সময়জুড়ে ব্রিটিশ পাউন্ডের দরপতন হয়েছে। তবে মৌলিকভাবে দুটি কারেন্সি পেয়ারের মূল্যই একটি নিম্নমুখী কারেকশনের মধ্যে রয়েছে। উভয় ক্ষেত্রেই এটি সম্পূর্ণরূপে একটি টেকনিক্যাল কারেকশন, কারণ বর্তমানে মার্কিন ডলার কেনার জন্য কোনো মৌলিক বা আনুষ্ঠানিক কারণ নেই। ডোনাল্ড ট্রাম্প গত দেড় সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন নতুন শুল্ক আরোপ করছেন ও বিদ্যমান শুল্ক বাড়াচ্ছেন, তাই যদি এখন মার্কিন ডলার দুর্বল হতো, সেটি একেবারে যৌক্তিক ও প্রত্যাশিত হতো। তবে মূল্য একটি দিকেই চিরকাল মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে না এবং মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা প্রতিদিন একই দিকে পজিশন ওপেন করতেও পারে না। এ কারণেই এখন আমরা একটি কারেকশন পর্যবেক্ষণ করছি, যার পর পুনরায় ছয় মাসব্যাপী চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ধারাবাহিকতার আশা করা যায়। 1-ঘণ্টার টাইমফ্রেমে নিম্নমুখী প্রবণতা শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তখনই তৈরি হবে, যখন এই পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেকআউট করে ঊর্ধ্বমুখী হবে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে সোমবার কোনো ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়নি। কেবল দিনের শেষে এই পেয়ারের মূল্য 1.3413–1.3421-এর সাপোর্ট জোনে পৌঁছায়, যেখান থেকে মঙ্গলবার ট্রেড করার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। এই জোন থেকে মূল্য রিবাউন্ড করলে লং পজিশন ওপেন করার সুযোগ আসবে, যা মৌলিক বিশ্লেষণের দৃষ্টিকোণ থেকে যথার্থ হবে। তবে আজ প্রকাশিতব্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন দিকেও নজর দিতে হবে, যা ডলারের মূল্যের নতুন উর্ধ্বমুখী প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে, যদিও এই সূচক বর্তমানে ফেডের আর্থিক নীতিমালার ওপর খুব বেশি প্রভাব ফেলছে না।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
1-ঘণ্টার টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের দরপতন অব্যাহত রয়েছে এবং সেটি তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী দরপতন ছিল। আমরা মনে করি বর্তমান দরপতনটি পুরোপুরি একটি টেকনিক্যাল কারেকশন, কারণ ডলারের দর বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য কোনো মৌলিক ভিত্তি নেই। তবুও ট্রেডাররা শুধুমাত্র টেকনিক্যাল কারণের উপর ভিত্তি করেই ট্রেড করতে পারে, এবং আমরা এখন সেটাই করছি। যতক্ষণ না এই পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইনের ওপরে কনসোলিডেট করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ছয় মাসব্যাপী চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার জন্য কোনো টেকনিক্যাল ভিত্তি নেই।
মঙ্গলবার GBP/USD পেয়ারের ট্রেডারদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে মূল্য 1.3413 লেভেলের ব্রেক করে উপরের দিকে যাবে নাকি নিম্নমুখী হবে। যদি মূল্য এই লেভেল ব্রেক করে নিচের দিকে নামে, তবে টেকনিক্যাল কারণেই দরপতন চলতে থাকবে। অন্যদিকে, এই লেভেল থেকে রিবাউন্ড ঘটলে সেটি নিম্নমুখী প্রবণতার সমাপ্তি নির্দেশ করতে পারে এবং সতর্কভাবে এই পেয়ার ক্রয়ের পক্ষে যুক্তি তৈরি করবে।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে বর্তমানে ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনা করা যেতে পারে: 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3518–1.3532, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763, 1.3814–1.3832।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলির ভাষণ নির্ধারিত রয়েছে, যদিও এই ভাষণ গভীর রাতে অনুষ্ঠিত হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জুন মাসের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা ডলারকে সহায়তা করতে পারে, কারণ এই সূচকের বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।